ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধের কারণঃ সম্প্রতি রাশিয়া এবং ইউক্রেন এর মাঝে বিরাজ করছে যুদ্ধের দামামা ধনী এবং ইতোমধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন এর বিভিন্ন স্থানে আক্রমনের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা গুলো দখল করে নিচ্ছে। মূলত কেন এই যুদ্ধ আজকে সেটা নিয়ে আলোচনা করা হবে।
ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধের কারণ ও ইতিহাস
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দিয়ে সেখানে সামরিক অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এটিই মূলত পুতিনের একটি রাজনৈতিক ধূর্ততা হিসেবে পৃথিবীর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে পরিগণিত হয়েছে।
পুতিন ইউক্রেনের সরকারকে বলেছেন যে তারা যেন তাদের সকল অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে এবং এতেই তাদের মঙ্গল। এছাড়াও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সতর্ক করেছেন যে যদি কোনো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রাশিয়ার কাজে বাধা দিতে আসে তাহলে মস্কো এর কঠোর জবাব দেবে।
এখন মূলত কি নিয়ে বাধল এই যুদ্ধ আর ইউক্রেনের অস্ত্রশস্ত্র বা সামরিক শক্তি কতটুকু রয়েছে যেটা দিয়ে রাশিয়াকে প্রতিহত করা সম্ভব হবে কিনা।
একসময় পৃথিবীর তিন ভাগের এক ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র ছিল ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে। নিজেদের অখন্ডতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য মিসাইল সহ বিভিন্ন ক্ষেপনাস্ত্রের কোষাগার থাকলেও একটি চুক্তির মাধ্যমে রাশিয়া এবং আমেরিকা ইউক্রেনকে তাদের সার্বভৌমত্বের নিরাপত্তা বিষয়ক গ্যারান্টি দিয়ে অস্ত্রগুলো ধ্বংস করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিল।
কিন্তু আজ তারা রাশিয়ার তুলনায় অস্ত্র এবং সামরিক শক্তির দিক দিয়ে অনেক দুর্বল একটি রাষ্ট্র।
ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে ইউক্রেন আসলে প্রকৃতপক্ষে কোনদিনও কোন স্বয়ংসম্পূর্ণ রাষ্ট্র ছিল না এবং এখনও নেই। ১৯১৭ সালে লেনিনের দুর্বল নেতৃত্তের কারণে রাশিয়ার একটি ভেঙে যাওয়া ভূখণ্ড হলো ইউক্রেন। এটি মূলত রাশিয়ার বলশেভিক কমিউনিস্টদের সৃষ্ট একটি ভূখন্ড।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন যখন ভেঙে পড়ে তখন মিখাইল গর্বাচেভ এর দুর্বল সরকার এর কারণে ইউক্রেন স্বাধীন হবার সুযোগ পেয়েছিল।
- আজকের ফজরের নামাজের সময় সূচী
- ২০২২ সালের বাংলা ক্যালেন্ডার
- ২৫০+ ধাঁধা উত্তর সহ । বাংলা ধাঁধা । হাসির ধাঁধা
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ
দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত। এই অঞ্চল মূলত বিখ্যাত বিভিন্ন প্রকার খনিজ সম্পদ এবং ভারী লোহা উৎপাদনের জন্য। রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয় দেশেই এই অঞ্চল দুটি নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। ২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৪ হাজার মানুষ এই দুই দেশের মধ্যকার সংঘাতের শিকার হয়েছে মৃত্যুর মধ্য দিয়ে।
কিন্তু ২০১৫ সালে জার্মানি এবং ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় মিনস্ক নামক একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যেখানে বলা হয়েছিল দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চল দুটিক একটি বিশেষ মর্যাদা দেয়া হবে এবং ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যকার সংঘাতের ইতি টানতে হবে। এই চুক্তির পরে এটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বার বার বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে বিশেষত রাশিয়ার কারণে।
ডনবাস অঞ্চলে বসবাসকারী রুশ ভাষাভাষী জনগণকে ইউক্রেনের হাত থেকে রক্ষা করতে মস্কো নিয়মিত তাদেরকে সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেছে ইউক্রেন এবং পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো। যদিও রাশিয়া বারবার সেটা অস্বীকার করেছে।
কিন্তু হঠাৎ রাশিয়ার পার্লামেন্টে এই দুই অঞ্চলকে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য পুতিনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এমনকি পার্লামেন্টে উপস্থিত ২ অঞ্চলের নেতারাও অঞ্চলটিকে স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে সামরিক সহায়তা করার পক্ষে মত দেন।
আর এরই ধারাবাহিকতায় ভ্লাদিমির পুতিন দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চল দুটি কে স্বীকৃতি প্রদান করেন এবং সেখানে সামরিক অভিযান পরিচালনা করার জন্য নির্দেশ দেন। এর মাধ্যমে সামরিক অভিযান পরিচালনা পুতিনের জন্য আইনগত পদক্ষেপ হিসেবে দাঁড়ায়।
আর সে কারণেই পশ্চিমা বিশ্ব মন্তব্য করেছে যে তারা রাশিয়ার এই কার্যকলাপকে যুদ্ধ বলবেন নাকি সামরিক অভিযান বলবেন বুঝতে পারছেন না।
এখন দেখার বিষয় হলো সামরিক অভিযানের নামে রাশিয়ার ইউক্রেনের প্রতি এই আক্রমণের ফলাফল কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হতে যাচ্ছে কিনা সেটা নিয়েও অনেকে কথা বলা শুরু করেছেন।
এ ব্যাপারে আপনাদের কি মতামত সেটা জানিয়ে অবশ্যই মন্তব্য করতে ভুলবেন না।