নীরবতা নিয়ে কবিতা Nirobota Niye Kabita: নীরবতা নিস্তব্ধতা বা চুপ থাকা নিয়ে ০৬টি কবিতা দেয়া হলো নিচে । আমাদের মধ্যে অনেকেই আমরা নিরব থাকা পছন্দ করি । আসলে নিরবতা মানে চুপ থাকা নয় । নিরবতা মানে অনেক প্রশ্নের একটাই উত্তর হওয়াকেও বোঝায় । আর আমরা জানি একটা প্রচলিত প্রবাদ আছে তা হলো ” নিরবতা সম্মতির লক্ষন” । চলুন দেখে নেই আমরা কিছু কবিতা।
নীরবতা নিয়ে কবিতা
কবিতা -১
নীরবতা এক প্রশান্তির নাম
নিকষ নিশীথে আকাশের সাদা মেঘ,
নিস্তব্ধতা এক কোলাহলের নাম
জলরংগে ছেয়ে থাকে জোরালো আবেগ ।
প্রাপ্তি এক বিরহের ঘ্রাণ
দুরের পথ চেয়ে সীমানা টানে দৃষ্টি
ধোঁয়াশা এক বেহায়াপনা
মরুময় অনিশ্চয়তাই যার দিব্যসৃষ্টি ।
আমাদের একলা পথের নির্জনতা
দক্ষিণের ঝিরিঝিরি শংখসাজে
আলপনা তবু হৃদয়ে সাজাই
ততোই বাড়বে মন ব্যথা,
একটা পুরনো থেমে যাওয়া ঢেউয়ের মাঝে ।
লেখকঃ শাহানারা সুলতানা তানিয়া
কবিতা -২
যতই বলবে কথা
তার চাইতে ভালো নীরবতা
দোষগুণ সবকিছু ঢাকা।
আলগা প্রেমের গভীরতা
বারে আরো বিদ্যা বুদ্ধি,
ঘটে আরো চিত্তশুদ্ধি।
লেখকঃ মনিরুল মরিক
কবিতা -৩
নীরবতা তুমি কেন এত মধুর
অস্থিত্বের ক্ষনে ক্ষনে
নীরবতাকে ডেকে আনে ৷
তোমাকে না যায় ধরা
আবার না যায় ছোয়া,
তবুও কেন এত
তোমাকে ভালোবাসি।
কষ্টের মূহুর্ত গুলোতে
তুমিই হও সাথি,
তুমি আমার জন্য
করোনা তো কিছুই।
তবুও কেন এত,
তোমায় ভালোবাসি
হে নীরবতা ৷
লেখকঃ আকাশ হাসান
কবিতা -৪
আমার হাতে কোনও শাবল ছিল না, বাটালিও নয়,
তবু, এতদিন তিলে তিলে গড়ে তোলা দুর্গ
এক দুপুরের বৃষ্টিতে কীভাবে ধুয়ে গেল!
আরওই বিশাল পাথুরে অবরোধ-ই যে আড়াল করে রেখেছিল
হার্মাদের মত এক খ্যাপা নদী,
এতকালতা আমি জানতেও পারিনি।
সেই অর্গলহীন সজল
সারাদিন, সারারাত আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে চলেছে।
ওই ভেসে যাচ্ছে আমার অঙ্গদ, শিরস্ত্রাণ,
আবরণহীন ভাসতে ভাসতে
আমি চড়তে পারছি
গাঢ় দীঘিকার চেয়ে সজল তোমার দু চোখের ভাষা,
আমি শুনতে পাচ্ছি
সমুদ্রের নাভি থেকে উঠে আসা
মারমেইডস-এর গলায় তোমার গান,
দিশেহারা, ওলোট-পালোট ঢেউয়ে
ধুয়ে যাচ্ছে আমার গার্হস্থ্য-সন্ন্যাস,
জোয়ারে জোয়ারে
এ তোমাকে কোথায় নিয়ে চলেছে,
আমার নীরবতা আমার ভাষা।
জ্বালিয়ে মোমের বাতি
নিশাত প্রহরণ।
বানিয়াছি আমি খুঁজিতে নিজের ভাতি।
অতি আলো তে ভুলিয়া গিয়াছি
সেরা অর্জিত খ্যাতি।
কত সমাদর কত যে প্রণাম সবই বনিলো আজ ব্যাধি।
পৃষ্ট তাহার জবাব খুঁজিতে গেলাম দ্বারেদ্বার
বুঝিলাম ইহা দোষ কারো না, দোষী যে যার যার।
অতি আলোতে ভুলে যে সবাই আঁধারে আলোর প্রীতি
নিজেকে বানাতে শ্রেষ্ঠতম দূর করি এই ভীতি।
তবে না গড়িবে আমার দ্বারা শীর্ষ জাতের জাতি।
চুপ করে কেন, কেন এই নীরবতা,
গর্জে ওঠো না প্রাণ?
নিরব থাকার দিন গেল যে,
এবার করো নিজেরে দান।
কবিতা -৫
রাতের আঁধারে হেঁটে চলি নীরবে,
শোনতে পাই নিজের পায়ের আওয়াজ,
পথ এগোলেই হারিয়ে যায় পথ,
পেছনে ফিরে দেখি কুয়াশার আঁধার।
প্রকৃতির নীরবতা মনে ভয় জাগায়,
কে যেন ডাকছে আমায়,
একবার ডেকে হারিয়ে যায় কোথায়?
খোঁজে ফিরি তারে চাঁদনি আলোয় ।
জোনাকিরা আলো জ্বেলে আঁধারের মাঝে,
ঝিঁঝিঁপোকা লুকিয়ে ডাকে বারবার,
চাঁদের রুপালি আলো ছড়িয়ে চারিদিকে,
বয়ে যায় একরাশ মৃদু বাতাস ।
সারাদিনে ঘুমিয়ে থাকার পর তারারা এবার জেগে ওঠে,
আঁধার আকাশে ঘিরে থাকে তাদের রাজত্ব,
ডাহুকটা অনবরত ডেকে যায়,
বাদুড়েরা পাখা ছড়িয়ে ছুটে খাবারের সন্ধানে।
কোলাহল থেমে যায় ব্যস্ত পৃথিবীর,
দু’চোখ জুড়ে নেমে আসে ঘুম,
আযানের ধ্বনি শুনতে পাই দূর মসজিদে,
নিদ্রার মাঝে হারায় সারাদিনের ব্যস্ততা।
লেখকঃ গোবিন্দ বীন
কবিতা -৬
আমি চাই নি তোমার আড়ষ্ট চাহনি
চাইনি সে বিমুখ পরিভাষা
তোমার চোখের মিয়্রমানতায়
দেখছ এক মিথ্যা প্রতিবিম্ব
দেখনি আমার কূকড়ে মরার
বিমর্ষ কিছু দৃশ্য
দেখছ আমার বিরক্ততা
বুঝনি আমি তো তৃষ্ণ
শুভ্রতা আমার অংশু হলে
তুমি যে তাহার কৃষ্ণ।
নিকোটিনের ধোয়ার ধোয়াশায়
আলো সাজে,আজ-এ ম্রিয়মাণ পৃথিবীতে
মহাকাশের নক্ষত্র সাজে বিষাদে
দুঃখ খুঁজে নিকোটিন বুক পাঁজরে!
থাকবো না হয়ত এই ভুবনে
লিখব এপিটাফে নাম,
ধোয়াশার শহর জুড়ে ভাসবে ধোয়া
শুন্যতা লিখেই হবে পূর্ণতা ছোঁয়া,
শহর জুড়ে জমবে আলোর মেলা।
তোমার শহরে এই তাহলে নিরবতার খেলা।
কবিতা -৬
ধূসর আকাশ আবছা আলো,
ভাসছে দেখো মেঘের কালো ।
দমকা হাওয়ায় সপ্ন উড়ায়
দু হাত ভরে কুড়িয়ে নিও,
মন মাঝারি, দিচ্ছো উকি,
খুঁজছো নাকি, আমায় তুমি?
খুঁজো না আর,অন্তরালে,
এই যে আমি অন্ধকারে।
এই আঁধারের বঞ্চনায়
আর কালো মেঘের লাঞ্ছনায়।
নিরব কথার আপস ধাঁধায়
কেউ কাহোকে শুনবেনা।
তবুও কানে গুঞ্জবে কথা
হোক না যতই নীরবতা।
নিরব আমি নিরব তুমি,
কঠিন তব এ বাস্তবতা।
(১০০+) নীরবতা নিয়ে উক্তি, স্ট্যাটাস ও ক্যাপশন দেখুন
আশা করি আপনাদের মনের চাহিদা পূরণ করবে এই কবিতা গুলো। যদি আপনাদের নীরবতা নিয়ে ছোট কবিতা গুলো ভাল লাগে তো অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন।