যানবাহনে উঠার দোয়া ও তাসবিহ পড়ার নিয়ম

আমরা প্রয়োজনের তাগিদে বাসা বাড়ি থেকে বাইরে অথবা বাইরে থেকে বাসাবাড়িতে আসা-যাওয়া করে থাকি। আর এই আসা-যাওয়ার মাধ্যম হচ্ছে বাহন। হতে পারে সেটা গাড়ির রাস্তা বা নদীর পথ। তবে সেটা যাই-ই  হয়ে থাকুক না কেন, যানবাহনে চলাচলের জন্য আমাদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে বেশ কিছু নিয়ম-কানুন ও দোয়া। যেগুলো একজন মুসলিমের জন্য জেনে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

যানবাহনে উঠার দোয়া
যানবাহনে উঠার দোয়া

যানবাহনে উঠার দোয়া

আমরা জানি যে, ইসলামের পরিভাষায় দোয়া শব্দটির আক্ষরিক অর্থ আহ্বান বা ডাকা। যা ইসলামে একটি বিশুদ্ধ মিনতি প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একজন মুসলিম ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার নিকট তার প্রয়োজন মত আবদার করে থাকেন, পার্থনা করে থাকেন মনের সকল ইচ্ছা পূরণের জন্য।

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, তোমাদের প্রত্যেক ব্যক্তির দোয়া কবুল হয়ে থাকে। যদি সে তাড়াহুড়া না করে আর বলে যে, আমি দোয়া করলাম, কিন্তু আমার দোয়া তো কবুল হলো না। (বুখারি, হাদিস: ৬৩৪০)

আমাদের আজকের এই কন্টেন্টে তুলে ধরব যানবাহনে চলাচলের দোয়া এবং যানবাহনে চলাচলের তাসবীহ সম্পর্কে। তো আসুন জেনে নেই যানবাহনে উঠার দোয়া সম্পর্কে।

যানবাহনে আহরণের দোয়া আরবিতে

سُبۡحَٰنَ ٱلَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَٰذَا وَمَا كُنَّا لَهُۥ مُقۡرِنِينَ

যানবাহনে উঠার দোয়া বাংলা উচ্চারণ

“সুবহানাল্লাজী ছাখ্খারলানা হাজা ওয়ামা কুন্না লাহু মুক্বরিনীন ওয়া ইন্না ইলা রব্বিনা লামুন ক্বলিবুন।

যানবাহনে উঠার দোয়া বাংলা অর্থ

মহান আল্লাহর পবিত্রতা যিনি একে (বাহন) আমাদের অধীন করে দিয়েছেন, অথচ আমরা একে অধীন করতে সক্ষম ছিলাম না। আমরা আমাদের প্রতিপালকের কাছে প্রত্যাবর্তনকারী।

দোয়ার উপকার

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) সফরের উদ্দেশে বের হয়ে সওয়ারির ওপর পা রেখে তিনবার তাকবির (আল্লাহু আকবার) বলতেন। তারপর এই দোয়া পড়তেন।

যানবাহনে উঠার দোয়া পড়ার নিয়ম

যেকোনো সময় সড়কপথে বা নদীপথে যানবাহনে উঠার সময় বিসমিল্লাহ পাঠ করে প্রথমে ডান পা রাখবেন। তারপর তিনবার “আলহামদুলিল্লাহ” এবং তিনবার “আল্লাহু আকবার” বলে পাঠ করবেন।

পরবর্তীতে তিনবার “সুবাহানাল্লাহ” পাঠ করবেন। অতঃপর নিচের দোয়াটি পাঠ করার শেষে আকাশের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিবেন।

“সুবহানাকা ইন্নি যালামতু নাফসি ফাগফিরলি ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ্জুনুবা ইল্লা আনতা।

যানবাহনে চলাচলের তাসবিহ

যানবাহনে উঠার দোয়া
যানবাহনে উঠার দোয়া ও তাসবিহ পড়ার নিয়ম

হাদিসে কুদসিতে যানবাহনে চলাচলের নিয়ম, তাসবিহ, দোয়া এবং করণীয় সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। হজরত আলি ইবনে রাবিয়াহ রাদিয়াল্লাহু আনহু প্রিয় নবির শেখানো নিয়ম, তাসবিহ, দোয়া এবং ধারাবাহিক করণীয়গুলো হাদিসে কুদসিতে হুবহু তুলে ধরেছেন।

তিনি বলেন, “আমি হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুকে দেখেছি, একটি চতুষ্পদ জন্তু আনা হল; যেন তিনি তাতে আরোহণ করেন।” তিনি নিচের নিয়ম মেনে দুয়া পাঠ করতেন।

০১. بِسْمِ اللَّهِ – বিসমিল্লাহ বা আল্লাহর নামে (শুরু করছি)।

০২. الْحَمْدُ لِلَّهِ – আলহামদুলিল্লাহ বা সব প্রশংসা আল্লাহ জন্য।

০৩. سُبۡحَٰنَ ٱلَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَٰذَا وَمَا كُنَّا لَهُۥ مُقۡرِنِينَ – ‘পবিত্র সেই মহান সত্তা! যিনি এগুলোকে (সব যানবাহন) ‎আমাদের বশীভূত (নিয়ন্ত্রণাধীন) করে দিয়েছেন। আর ‎আমরা এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম ‎ছিলাম না।’ (সুরা যুখরুফ : আয়াত ১৩)

০৪. الْحَمْدُ لِلَّهِ আল-হামদুলিল্লাহি; সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য।

০৫. اللَّهُ أَكْبَر : আল্লাহু আকবার; আল্লাহ মহান।

০৬. سُبْحَانَكَ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ – ‘আপনি কতই-না পবিত্র সত্তা! নিশ্চয়ই আমি আমার নিজের নফসের উপর জুলুম করেছি; সুতরাং আমাকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয়ই আপনি ছাড়া কেউ গোনাহ ক্ষমা করতে পারবে না।’

আরও দেখতে পারেনঃ

তো বন্ধুরা, এই ছিল আমাদের আজকের যানবাহনে উঠার দোয়া ও তাসবিহ পড়ার নিয়ম এর বিস্তারিত আলোচিত বিষয়। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সবাইকে হাদিসের অনুসরণ ও অনুকরণে যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। চলার পথে যানবাহনের অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ও বিপদ-আপদ থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Setu Rani
Setu Rani

Hi, there. I'm a simple girl with passionate about blogging and writing. I love to take on challenges in life.

Articles: 168

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *