আল্লাহ তাআলা তার এবাদত এর জন্য আমাদের দিনে পাঁচবার আহ্বান জানান আযানের মাধ্যমে। আযান হল আল্লাহর এবাদতের বার্তাবাহক। আমরা মূলত প্রতিদিন পাঁচবার সুমধুর আযান শুনতে পাই। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পুর্বে মসজিদ থেকে ভেসে আসে আযানের শব্দ, আবার দুপুর বেলা ভেসে আসে আযানের শব্দ, সেইসাথে বিকাল, সন্ধ্যায় ও রাতেও।
আযানের দোয়া
আযানের দোয়া কি? এমন প্রশ্ন যাদের মনে আছে তাদেরকে বলব, মুসলমানদের জন্য মসজিদে প্রতিদিন যখন পাঁচ ওয়াক্ত আযান দেয়া হয় তখন আজান শেষে একটি দোয়া পড়া হয়ে থাকে, আর সেটাই হলো আযানের দোয়া.
আযানের দোয়া আরবি তে
« ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺭَﺏَّ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟﺪَّﻋْﻮَﺓِ ﺍﻟﺘَّﺎﻣَّﺔِ، ﻭَﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ﺍﻟْﻘَﺎﺋِﻤَﺔِ، ﺁﺕِ ﻣُﺤَﻤَّﺪﺍً ﺍﻟْﻮَﺳِﻴﻠَﺔَ
ﻭَﺍﻟْﻔَﻀِﻴﻠَﺔَ، ﻭَﺍﺑْﻌَﺜْﻪُ ﻣَﻘَﺎﻣَﺎً ﻣَﺤﻤُﻮﺩﺍً ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻭَﻋَﺪْﺗَﻪُ، [ﺇِﻧَّﻚَ ﻟَﺎ ﺗُﺨْﻠِﻒُ ﺍﻟْﻤِﻴﻌَﺎﺩَ ]».]
আযানের দোয়া বাংলা উচ্চারণ
আযানের দোয়া বাংলা উচ্চারণ সহ: আল্লা-হুম্মা রববা হা- যিহিদ্ দা‘ওয়াতিত্ তা-ম্মাতি ওয়াস সালা-তিল ক্বা-’ইমাতি আ-তি মুহাম্মাদানিল ওয়াসীলাতা ওয়াল ফাদীলাতা ওয়াব্‘আছহু মাক্বা-মাম মাহমূদানিল্লাযী ওয়া‘আদতাহ, ইন্নাকা লা তুখলিফুল মী‘আদ।
আযানের দোয়া বাংলা অর্থ
“হে আল্লাহ! এই পরিপূর্ণ আহ্বান এবং প্রতিষ্ঠিত সালাতের রব্ব! মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে ওসীলা তথা জান্নাতের একটি স্তর এবং ফযীলত তথা সকল সৃষ্টির উপর অতিরিক্ত মর্যাদা দান করুন। আর তাঁকে মাকামে মাহমূদে পৌঁছে দিন, যার প্রতিশ্রুতি আপনি তাঁকে দিয়েছেন। নিশ্চয় আপনি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন না।” [বুখারী ১/২৫২, নং ৬১৪]
আজানের উত্তর দেওয়া কি?
অনেকেই জানেন না আজানের উত্তর দেওয়া সুন্নত ফরয না ওয়াজিব। আবার অনেকেই জেনেও নিশ্চিত নন। তাই সঠিক উত্তর জেনে নিন, আজানের উত্তর দেওয়া সুন্নাত।
আযানের নিয়ম
আযান দেওয়ার ও শোনার সময় আমাদের প্রত্যেক মুসলিমের মেনে চলা উচিত কিছু আদব-কায়দা, যা একজন মুমিন ব্যক্তির জন্য অত্যন্ত কার্যকরী কর্ম। আর তাই আমাদের আজকের পোস্টে আলোচনা করছি আযানের দোয়া অর্থসহ, আযানের জবাব, আযানের নিয়ম ও এর সম্পর্কিত সকল বিষয়বস্তু। তাই আসুন জেনে নেই আযানের দোয়া ও আমাদের জন্য নির্ধারিত আরও কিছু আদব-কায়দা।
প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শাফায়াত লাভের উপায় সুন্নাত এর আমল। যেহেতু আজান শোনা এবং তার উত্তর দেওয়া সুন্নত তাই এটি আমাদের প্রত্যেক মুসলিমের জন্য একটি অন্যতম দায়িত্ব। সেই সাথে পড়া উচিত দরুদ ও অন্যান্য কিছু দোয়া।
তবে আমাদের সমাজে কিছু লোক এটা জানলেও তারা আযানের জবাব এবং দোয়া পড়ার সঠিক নিয়ম জানেন না। তাই আমরা এখন আলোচনা করব আযানের জবাব দেওয়া এবং আযানের পরের দোয়া পড়ার প্রসঙ্গে।
যখন কোন ব্যক্তি আহ্বান আজান শুনতে পায় তখন সে তার জবাবে সেই বাক্যগুলিই বলবে। তবে শুধু মাত্র হাইয়্যা আলাস সালাহ ও হাইয়্যা আলাল ফালাহ বলার জবাবে লা-হাউলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লাবিল্লাহিল আলিয়্যিল আজীম বলবে। আর হ্যাঁ অবশ্যই মসজিদের মোয়াজ্জেন যেভাবে বলবে শ্রবণকারীও তার মতো করেই বলার চেষ্টা করবে।
তবে হাইয়্যা আলাস সালাহ ও হাইয়্যা আলাল ফালাহ বলার জবাবে লা-হাউলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লাবিল্লাহিল আলিয়্যিল আজীম বলবে। তেমনি ভাবে মুয়ায্যিন যথন الصلاة خير من النوم বলবে তখন ছাদাকতা ওয়া বারারতা ( صدقت وبرر) বলবে। পরবর্তীতে মুয়াযযিনের কথার জবাব দেওয়া শেষ করার পর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দরূদ পড়বে।
মনে রাখবেন, আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে দোয়া কবুল করা হয়। তাই নিজের জন্য দোয়া চাওয়ার সঠিক সময় এটি।
আরও দেখুনঃ
- মাহমুদুল হাসান নামের অর্থ কি (বাংলা, আরবি/ইসলামিক অর্থ)
- আজকের ফজরের নামাজের সময় সূচী
- ২০২২ সালের বাংলা ক্যালেন্ডার
- রাজু নামের অর্থ কি (বাংলা, আরবি/ইসলামিক অর্থ)
- ৫০০+ কোরআন থেকে ছেলেদের নাম ইসলামিক অর্থ সহ
- আরিয়ান নামের ইসলামিক অর্থ কি – আরিয়ান নামের অর্থ কি
- ২৫০+ ধাঁধা উত্তর সহ । বাংলা ধাঁধা । হাসির ধাঁধা
- স দিয়ে ছেলেদের ইসলামিক নাম অর্থসহ
- আল্লাহর ৯৯ নাম বাংলা অর্থসহ ফজিলত ও আমল
- ৭০ টি বিপদ থেকে মুক্তির দোয়া ও দারিদ্রতার আমল
- ইফতারের দোয়া বাংলা উচ্চারণ সহ
- যানবাহনে উঠার দোয়া ও তাসবিহ পড়ার নিয়ম
আযানের জবাব
আমাদের প্রত্যেকে মুসলিমের উচিত ধীর ও স্থিরভাবে আজান শুনা ও তার জওয়াব দেয়া এবং « ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺭَﺏَّ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟﺪَّﻋْﻮَﺓِ ﺍﻟﺘَّﺎﻣَّﺔِ، ﻭَﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ﺍﻟْﻘَﺎﺋِﻤَﺔِ، ﺁﺕِ ﻣُﺤَﻤَّﺪﺍً ﺍﻟْﻮَﺳِﻴﻠَﺔَ
ﻭَﺍﻟْﻔَﻀِﻴﻠَﺔَ، ﻭَﺍﺑْﻌَﺜْﻪُ ﻣَﻘَﺎﻣَﺎً ﻣَﺤﻤُﻮﺩﺍً ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻭَﻋَﺪْﺗَﻪُ، [ﺇِﻧَّﻚَ ﻟَﺎ ﺗُﺨْﻠِﻒُ ﺍﻟْﻤِﻴﻌَﺎﺩَ ]».] এই দোয়া বা মােনাজাত করা। ইমাম সাহেব যখন যেই যেই শব্দ উচ্চারণ করে আজান দিবে, শ্রোতাগণও তখন সেই সেই শব্দের জওয়াব দিবে। হাদীছে তিরমীজী শরীফে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি সন্তষ্টচিত্তে আজান শুনে তার জওয়াব আদায় করে মােনাজাত করবে, কেয়ামতের দিন আল্লাহতাআলা বিশেষ সন্তষ্ট হয়ে তাকে বেহেশতে স্থান দিবেন। (তিরমীজী) আল্লাহ
আযানের সময়
দিনে রাতে পাঁচবার আযান দেওয়া হয়. আর আজান তখনই দেওয়া হয় যখন নামাজের সময় হয়। তাই ফজরের আজান এর শব্দ ভেসে আসে সুবহে সাদিক উদিত হলে অর্থাৎ সূর্য পূর্ব আকাশে উদিত হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে। যোহর আজানের শব্দ ভেসে আসে সূর্য পশ্চিম আকাশে একটু ঢলে পড়লে। আছর নামাজের আজান ভেসে আসে সূর্যের প্রখরতা থাকতে। অতঃপর মাগরিব আজানের আওয়াজ ভেসে আসে সূর্য অস্ত যাওয়ার সাথে সাথে। সেইসাথে সর্বশেষ অর্থাৎ এশার আযানের ধ্বনি ভেসে আসে সূর্য অস্ত যাওয়ার পর রাতের এক তৃতীয়াংশ সময়ে।